সার্ভিসিং মানেই শুধু বাইক ধুয়ে চেইনে তেল দেয়া নয়, করতে হবে ২০ টি কাজ

মে 04, 2022

সার্ভিসিং মানেই শুধু বাইক ধুয়ে চেইনে তেল দেয়া নয়, করতে হবে ২০ টি কাজ

মোটরসাইকেলের মেইন্টেনেন্স বলতে আমরা বুঝি যেই পার্টসগুলো নির্দিষ্ট সময় পর পর পরিস্কার অথবা পরিবর্তন করতে হয় সেটা করা এবং বাইকের আগাগোড়া একটা চেক আপ অর্থাৎ কোথাও কোনো সমস্যা থাকলে সেটা সারানো। মোটকথা মোটরসাইকেল সার্ভিসিং এর ক্ষেত্রে ২০ টি আবশ্যিক কাজ করিয়ে ফেললে সেটাকে প্রপার সার্ভিসিং বলা যেতে পারে।

মোটরসাইকেল নিয়মিত সার্ভিসিং করানো হলে যেমন বাইকের আয়ু বাড়ে তেমনি তেল সাশ্রয়ী হয় এবং মোটরসাইকে ক্ষনাবেক্ষন খরচও অনেক কমে আসে।

নিয়মিত পরিচর্যা করলে কমদামি মোটরসাইকেলও প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট।

দুই থেকে ৩ মাস অথবা প্রতি ৫ হাজার কিমি পরপরই মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করানো ভালো।

আপনার মোটরসাইকেল যেখানেই সার্ভিসিং করান, খেয়াল করে নিম্নের মোটর সাইকেল মেরামত এর ২০টা ধাপ বা কাজ নিশ্চিত করুন, কারন সার্ভিস মানেই শুধু বাইক ধুয়ে পলিশ করে দেয়া নয়।

যারা সার্ভিসিং এর নামে বাইক ধুয়ে চেইনে একটু তেল দিয়ে দেয় এমন সার্ভিস সেন্টার থেকে দূরে থাকুন।

১ : মোটরসাইকেল ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে, তারপর ভালোভাবে এয়ারপ্রেশার দিয়ে শুকিয়ে ফেলুন।

২ : স্পার্ক প্লাগ, প্লাগের স্থান পরিষ্কার করতে হবে, প্লাগ এর গ্যাপ ঠিক করতে হবে, এইক্ষেত্রে গ্যফিলার গজ অবশ্যই ব্যাবহার করতে হবে৷

৩ : ভাল্ভ / টেপেট ক্লিয়ারেন্স ঠিক আছে কিনা দেখতে হবে না থাকলে ঠিক করুন।(ফিলার গজ মাস্ট)

৪ : আইডল আরপিএম ঠিক করা। ১২০০-১৪০০ আরপিএম মধ্যে রাখতে হবে।

৫ : ফুয়েল লাইনের কোথাও লিকেজ বা ফাটা আছে কিনা চেক করতে হবে।

৬ : এয়ার ফিল্টার ইউজার ম্যানুয়াল অনুসারে পরিস্কার করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে চেঞ্জ করতে হবে।

৭ : ইঞ্জিন অয়েল, অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করুন।

৮ : সামনের এবং পিছনের ব্রেক চেক করা জরুরি। প্রয়োজন হলে এডজাস্ট করতে হবে, ব্রেক চাপলে ব্রেকলাইট জ্বলে কিনা চেক করতে হবে অবশ্যই।

৯ : ক্লাচ লিভার ফ্রি প্লে চেক এবং এডজাস্ট করতে হবে (১০-১৫ এমএম ফ্রি প্লে রাখতে হবে)

১০ : চাকার অবস্থা দেখুন, কাচ, ছোট পিন, পেরেক কোথাও লুকায়ে আছে কিনা দেখুন।পরিষ্কার করুন। মেয়াদ উত্তীর্ণ মার্কিং স্পর্শ করলে টায়ার পরিবর্তন নিয়ে অবহেলা নয়।

১১ : উভয় চাকার বিয়ারিং ঢিলা কিনা চেক করুন।

প্রয়োজন হলে রিপ্লেস করুন

১২ : হ্যান্ডেলবার ডান দিকে বাম দিকে মসৃন ভাবে ঘুরতেছে, কোথাও টাইট ঢিলা অনুভুত হলে এডজাস্ট করুন।

১৩ : সামনের চাকার ফর্ক, পিছনের চাকার শক এবজরভার ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, তেল লিক

হচ্ছে কিনা চেক করুন।

১৪ : ড্রাইভ চেইন বেশি ঢিলা , বেশি টাইট থাকলে এডজাস্ট করুন , চাকার দুপাশের মার্কিং অনুযায়ী চেইন সমান্তরাল করুন। নির্দেশিত লুব্রিকেন্ট চেইন এ লাগান।

১৫ : সকল নাট বোল্ট চেক করুন, ঢিলা থাকলে টাইট করতে হবে।

১৬ : আইডল আরপিএম এ নির্গত ধোয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড পরিমাপ করুন, সমন্বয় করুন।

(আধুনিক সুবিধাযুক্ত সার্ভিসিং সেন্টার ছাড়া সম্ভব নয়।)

১৭ : চাকার হাওয়ার প্রেসার চেক করুন, প্রয়োজনে হাওয়া দিন রিকমেন্ডেশন অনুযায়ী।

১৮ : সকল লাইট , ইলেকট্রিকেল সুইচ পরীক্ষা করতে হবে ।

১৯ : সকল মুভিং পার্ট চেক করুন, লুব্রিক্যান্ট দিন। সাইড স্ট্যান্ড, সেন্টার স্ট্যান্ড , স্প্রিং এর দুই প্রান্ত।

২০ : ক্লাচ ক্যাবল, থ্রটল ক্যাবল চেক করুন, ব্রেক কেবলে লুব্রিক্যান্ট দিন এর পর ডিস্ক রটর সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন।

উপরের সব শেষ হলে একটা টেস্ট ড্রাইভ দিন ।

এরপর ক্লিন করে চাইলে একটু পালিশ দিয়ে চকচকে ঝকঝকে করে নিতে পারেন আপনার প্রিয় বাইকটি৷