টায়ারের পোস্টমর্টেম

ফেব্রুয়ারি 08, 2022

টায়ারের পোস্টমর্টেম
টায়ার হচ্ছে সিলিকন, রাবার, সুতা/স্টিল এবং কেমিক্যাল এর সংমিশ্রণে তৈরি এমন একটা রিং আকৃতির উপাদান যা চাকার রিমকে ঘিরে থাকে এবং একটি গাড়ির এক্সেল লোডকে চাকার মধ্য দিয়ে চাকা থেকে মাটিতে স্থানান্তর করতে এবং চাকাটি যে পৃষ্ঠের উপর দিয়ে যায় তার উপর ট্র্যাকশন প্রদান করে থাকে।

টায়ার কি জিনিস?

টায়ার হচ্ছে সিলিকন, রাবার, সুতা/স্টিল এবং কেমিক্যাল এর সংমিশ্রণে তৈরি এমন একটা রিং আকৃতির

উপাদান যা চাকার রিমকে ঘিরে থাকে এবং একটি গাড়ির এক্সেল লোডকে চাকার মধ্য দিয়ে চাকা থেকে মাটিতে স্থানান্তর করতে এবং চাকাটি যে পৃষ্ঠের উপর দিয়ে যায় তার উপর ট্র্যাকশন প্রদান করে থাকে।

সহজ করে বললে টায়ার হচ্ছে যানবাহনের জুতা।

আমাদের যেমন বিভিন্ন রাস্তায় চলতে গেলে আলাদা আলাদা জুতার প্রয়োজন বাইক বা গাড়ির ক্ষেত্রেও তাই।

যেকারনে রোড, অফরোড, স্নো টায়ার, অল টেরেইন, অল সীজন, ডুয়াল পারপাস, স্পোর্টস, রান ফ্ল্যাট, হেভি ডিউটি ইত্যাদি বিভিন্ন ক্যাটাগরির টায়ারের উৎপত্তি।

মুলত টায়ারের কন্সেপ্ট আবিস্কৃত হয় ১৮শ শতকের মাঝামাঝি যার পেছনে ছিলেন স্কটল্যান্ডের ইনভেন্টর রবার্ট উইলিয়াম থমসন।

যাই হোক বেশি গভীরে না গিয়ে আপাতত বাইকের টায়ারের দিকে ফোকাস দেই, বাইকের ক্যাটাগরি ভেদে একেক ধরনের বাইকে আমরা একেক ধরনের টায়ার দেখতে পাই, যেমন রোড টায়ার, অফরোড টায়ার এবং ডুয়াল পারপাস টায়ার।

কন্সট্রাকশন এর উপর ভিত্তি করে এই টায়ারগুলো আবার দুই ধরনের হয় যেমন রেডিয়াল এবং বায়াস।

রেডিয়াল টায়ারে স্টীল বেল্ট ব্যাবহার করা হয় যা ৯০ ডিগ্রি এংগেলে বসানো থাকে এবং বায়াস টায়ারে ব্যাবহার করা হয় রি এনফোর্সিং কর্ড যা ৪৫ ডিগ্রি এংগেলে বসানো থাকে।

রেডিয়াল এবং বায়াস টায়ারের মধ্য কিছু ব্যাবহারিক পার্থক্য এবং সুবিধা-অসুবিধা আছে, আসুন জেনে নেই।

রেডিয়াল টায়ারের সুবিধাঃ

১. উচ্চ গতিতেও টায়ার তেমন গরম হয়না ফলে পার্ফর্মেন্স হেরফের হয়না।

২. পাংচার হবার প্রবনতা কম থাকে।

৩. ওয়াইড ফুটপ্রিন্টের কারনে বেশি স্ট্যাবিলিটি দেয়।

সুবিধাঃ

১.টায়ার নয়েজ তুলনামূলক বেশি হয়

২. দাম বেশি

বায়াস টায়ারের সুবিধাঃ

১. শক্ত সাইড ওয়াল

২. অসমান রাস্তায় স্মুথ রাইড এক্সপেরিয়েন্স দেয়

৩. দাম কম।

অসুবিধাঃ

১. ট্র‍্যাকশন বেশি হবার কারনে দ্রুত ক্ষয় হয়

২. হাই রোলিং রেজিস্ট্যান্সের কারনে ফুয়েল খরচ বেড়ে যায়।

৩. স্মুথ রাস্তায় কিছুটা ভাইব্রেশন অনুভূত হয়।

৪. পাংচার হবার প্রবনতা তুলনামূলক বেশি।

৫. উচ্চগতিতে টায়ার গরম হয়ে যাবার কারনে কর্নারিং এর সময় টায়ার রোল ওভার হবার প্রবনতা থাকে যা হাই স্পিড কর্নারে ঝুকিপূর্ণ।

একটা টায়ারের মেয়াদকাল থাকে ৬ থেকে ৪৫ বছর।

টায়ারের গায়ে ম্যানুফ্যাকচারিং তারিখ উল্লেখ করা থাকে

তাই ভাল পার্ফর্মেন্স পেতে চেস্টা করা উচিত চলতি বছরের উৎপাদিত টায়ার কেনার জন্য।

টায়ারে TWI লেখা থাকে যেটা টায়ার ওয়ার ইন্ডিকেটর, অর্থাৎ টায়ারের TWI খাজের গভীরতাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে মাঝখানের খাজের গভীরতা যাচাই করা যায়, গভীরতা ২ মিলিমিটারের নিচে নেমে গেলে বুঝতে হবে টায়ার পরিবর্তন করার সময় চলে এসেছে।

সঠিক পার্ফর্মেন্স পেতেও টায়ারে সঠিক টায়ার প্রেশার রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ, টায়ারে কত প্রেশার রাখতে হবে তা আপনার বাইকের ব্যাক চেসিস বা সুইং আর্মে লেখা থাকে, অবশ্যই সেটা ফলো করবেন এবং মাঝে মাঝেই টায়ার প্রেশার চেক করা উচিত।

এখন বেশিরভাগ বাইকেই টিউবলেস টায়ার ব্যাবহার করা হয়, এর সুবিধা হলো পাংচার হলেও চট করেই হাওয়া বেরিয়ে যায় না ফলে রিপেয়ার শপ পর্যন্ত সহজেই যাওয়া যায়।

দাম একটু বেশি হলেও ভালো ব্রান্ডের টায়ার ব্যাবহার করা উচিত কারন চাকার উপর ভর করেই আপনি ও আপনার বাইক চলাফেরা করেন তাই টায়ার নিয়ে কোনো হেলাফেলা নয়।

টায়ার সম্পর্কিত আরো জিজ্ঞাসা ও মতামত কমেন্টে লিখে যেতে পারেন, আজ এ পর্যন্তই।

লেখাঃ ইকবাল আব্দুল্লাহ রাজ

এডমিন #Curious_Biker