ফুয়েল ইনজেকশন এবং কার্বুরেটর হলো একটি ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ করার দুটি ভিন্ন টেকনোলজি। বাজারে বর্তমানে একই বাইকের দুটি ভিন্ন সংস্করন আমরা দেখতে পাই, যার কারনে বাইক কিনতে গেলে কনফিউশানে পড়ে যাই fi নিবো নাকি কার্বোরেটর ইঞ্জিনের বাইক নেবো? কোনটা ভালো?
জয়েন করুন ৫০ হাজারের বেশি বাইকারের গ্রুপ কিউরিয়াস বাইকার
তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো এর বিস্তারিত।
আসুন শুরুতে ছোট করে জেনে নেই কোন টেকনোলজি কিভাবে কাজ করে?
কার্বুরেটর
কার্বুরেটর হল একটি পুরানো বা কনভেনশনাল ফুয়েল সিস্টেম যা ইঞ্জিনে জ্বালানি পাঠানোর আগে সুনির্দিষ্ট অনুপাতে বাতাস এবং ফুয়েল মিক্স করে। কার্বোরেটরে এয়ার ও ফুয়েলের মিক্সচার টা নিয়ন্ত্রণ করতে মেকানিকাল এলিমেন্টস ইউজ করা হয়৷ কার্বোরেটর সাধারণত উচ্চতা এবং তাপমাত্রা দিয়ে প্রভাবিত হতে পারে। তাই কার্বুরেটেড বাইকগুলির বেস্ট পার্ফমেন্স ধরে রাখতে টিউনিং করার প্রয়োজন হতে পারে।
আরো পড়তে পারেন
ফুয়েল ইনজেকশন
ফুয়েল ইনজেকশন বা এফ আই একটি লেটেস্ট এবং স্মার্ট ফুয়েল সিস্টেম। ইঞ্জিনে সঠিক পরিমাণে জ্বালানি সরবরাহ করতে কিছু ইলেকট্রনিক সেন্সর ব্যবহার করে এটি কাজ করে। স্মুথ ইঞ্জিন অপারেশন এবং বিভিন্ন তাপমাত্রা ও উচ্চতা পরিস্থিতিতে বেস্ট পার্ফমেন্স দিতে এই সিস্টেম খুব ভালো সাপোর্ট দেয় । ফুয়েল ইনজেকশন ইঞ্জিনে ফুয়েলের অপচয় কম হয় তাই ইঞ্জিন ফুয়েল এফিসিয়েন্ট হয় এবং একই সাথে কার্বন নি:সরন কমায়।
সারসংক্ষেপে, ফুয়েল ইনজেকশন কার্বুরেটরের তুলনায় বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা প্রদান করে, যার মধ্যে ভালো পার্ফমেন্স, বেশি মাইলেজ এবং কম কার্বন নির্গমন উল্লেখযোগ্য। লেটেস্ট মোটরসাইকেলগুলি সাধারণত ফুয়েল ইনজেকশন প্রযুক্তি নিয়ে বাজারে আসে।
আরো পড়তে পারেন
তাহলে কি এফ আই বেস্ট?
মুলত বেস্ট বলতে কিছুই নেই, প্রতিটি জিনিসের কিছু ভালো খারাপ দিক আছে তাই সেগুলো জানলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কোন ফুয়েল সিস্টেমের বাইক আপনি বেছে নেবেন?
১। কার্বোরেটর ইঞ্জিনের বাইক তুলনামূলক সস্তা হয়। তাই যাদের বাজেট ইস্যু আছে তারা কার্বোরেটর ইঞ্জিনের বাইক নিতেই পারেন৷ মেজর অসুবিধার কোনো কারন নেই।
২। ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম বেশ ক্রিটিক্যাল, তাছাড়া বেশ কিছু সেন্সর, ফুয়েল পাম্প, ইঞ্জেক্টর এবং ইসিইউর সমন্বয়ে এটা কাজ করে। তাই কোনো সেন্সর নস্ট হলে বা ইঞ্জেক্টর অথবা ফুয়েল পাম্প ফেইল করলে সেটা সারানো অনেক ব্যায়বহুল ও সময় সাপেক্ষ কাজ।
৩। কার্বোরেটর সিস্টেমের বাইকে কিছুটা লো কোয়ালিটির ফুয়েল হলেও অনেকক্ষেত্রেই তেমন সমস্যা করে না, কিন্ত এফআই ইঞ্জিনের বাইকে নিম্মমানের ফুয়েল পড়লে সেটা আপনাকে বেশ ভোগান্তিতে ফেলবে৷
৪। এফআই ইঞ্জিনে ফুয়েল সাপ্লাই অনেক প্রিসাইজ হবার কারনে মাইলেজ বেশি পাওয়া যায়, তবে আমাদের দেশের বাজারে বেশ কিছু কার্বোরেটর ইঞ্জিনের বাইকও আমরা দেখেছি যেগুলো সমান সিসির এফয়াই বাইকের সমান বা কিছু ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি মাইলেজ দিয়ে থাকে।
৫। কার্বোরেটর সিস্টেমের বাইকের মেইন্টেনেন্স তুলনামূলক অনেক কম হয়। টিউনিং করালেই অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়, এমনকি নতুন কার্বোরেটর কেনার দরকার হলেও আপনাকে খুব বেশি টাকা গুনতে হবে না। অন্যদিকে আমাদের দেশের তেলের মান ভালোনা বিধায় ফুয়েল ইনজেক্টর নিয়মিত ক্লিন করার প্রয়োজন হয় যা বেশ ঝামেলার কাজ। এছাড়া ফুয়েল পাম্প, ইঞ্জেক্টর, সেন্সর ইত্যাদি নস্ট হলে বেশ বড়সড় খরচের ধাক্কা আপনাকে সামাল দিতে হবে।
আরো পড়তে পারেন
পরিশেষে বলবো, লেটেস্ট টেকনোলজির বাইক অবশ্যই ভালো তবে যদি আপনি এফোর্ড করতে না পারেন তাহলে কার্বোরেটর ইঞ্জিনের বাইক কিনলেই যে ঠকে যাবেন বা বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হবেন এমন ভাবার ও কোনো কারন নাই৷।
আমার ব্যাক্তিগত মতামত হলো যদি এফিসিয়েন্সি অর্থাৎ মাইলেজের দিক থেকে আকাশপাতাল পার্থক্য না হয় তাহলে বাড়তি টাকা দিয়ে ফুয়েল ইনজেক্টর ইঞ্জিনের বাইক আমি কিনবো কেন?
তাছাড়া, বাড়তি মেইন্টেনেন্সের ঝামেলা বা বাড়তি খরচই বা আমি করবো কোন উদ্দেশ্যে?? যদি পছন্দের বাইকে এফআই ছাড়া আর কোনো অপশন না থাকে তাহলে ভিন্ন কথা৷
আশা করছি, আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন আপনার জন্য কোন ধরনের ফুয়েল সিস্টেমের বাইক সবচেয়ে সুইটেবল হবে। আর্টিকেল ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
ভিডিও অংকের হিসাবে খরচ কম কিসে, মিনারেল নাকি সিনথেটিক ?