হেলমেটের যত্ন না নিলে আপনার জীবন ঝুকিপুর্ন

মার্চ 24, 2022

হেলমেটের যত্ন না নিলে আপনার জীবন ঝুকিপুর্ন

মোটরবাইক অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ একটা বাহন তাই মোটরসাইকেল চালানোর সময় সেফটি গিয়ার এবং ভালো মানের সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করা বাধ্যতামূলক। কেননা শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে মাথা তুলনামূলক ভারী এবং নাজুক, তাই মাথা বাচাতে হেলমেটের কোনো বিকল্প নেই।

তবে যেই হেলমেট আমাদের মাথার সুরক্ষা দেয় সেই হেলমেটের ও কিন্ত সুরক্ষার প্রয়োজন আছে।

কি? অবাক হচ্ছেন??

অবাক লাগলেও এটাই সত্য যে হেলমেট মাত্র ৩ ফুট উচু থেকে পড়ে আঘাত পেয়েও দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং প্রতিবার আঘাতপ্রাপ্ত হবার পর হেলমেট আস্তে আস্তে দুর্বল হতে থাকে। সংগত কারনেই এক্সিডেন্টের পর ব্যাবহৃত হেলমেটটি বদলে ফেলা উচিত।

সুতরাং মোটামুটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় হেলমেটের সুরক্ষায় সচেতন না হলে হেলমেট ও আপনার মাথা বাচানোর ক্ষেত্রে যথাযথ সাপোর্ট দিবে না, তাই হেলমেটের যত্ন নেয়া খুবই জরুরি।

কিভাবে হেলমেটের যত্ন নিবেন তা খুব সহজ করে কয়েকটি পয়েন্টের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

১। পরিস্কার রাখাঃ

মাথার ঘাম, ধুলোবালি জনিত কারনে হেলমেট খুব দ্রুত নোংরা হয় তাই হেলমেট নিয়মিত পরিস্কার রাখা উচিত। আউটার শেল পরিস্কার করার ক্ষেত্রে শ্যাম্পু এবং পানি মিশিয়ে মাইক্রোফাইবার ক্লথ বা সুতি নরম কাপড় দিয়ে মুছলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

ইনার বা প্যাডিং পরিস্কারের বিষয়টা একটু ট্রিকি তাই এই কাজটা করতে হবে সতর্কতার সাথে৷

প্রথমে চিকপ্যাড, চিন কার্টেইন সহ পুরো প্যাডিং টা খুলে নিতে হবে৷ তারপর বড় পাত্রে পানি নিয়ে শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট মিশিয়ে প্যাডিং টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।

ময়লা ছেড়ে দেয়ার পর আরেকটা পাত্রে পরিস্কার পানি নিয়ে তাতে প্যাডিং টা কয়েকবার করে চুবিয়ে ধুয়ে নিতে হবে এবং শেষে ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।

এখানে মনে রাখতে হবে পানি থেকে তুলে কোনোভাবেই প্যাডিং জোরে চাপাচাপি করে নিংড়ানো যাবে না, তাহলে প্যাডিং নস্ট হবার চান্স থাকে। পানি ঝড়ানোর কাজটা করতে হবে খুব হাল্কা হাতে।

আঘাত থেকে বাচানো

হেলমেট যেন আছাড় না খায় সেদিকে খুব খেয়াল রাখতে হবে, হেলমেট ক্যারি করার সময় শক্ত হাতে ক্যারি করা উচিত৷

অনেকেই বাইক পার্ক করে হেলমেট বাইকের উপরে রেখে চলে যান এটা একেবারেই উচিত না।

এতে যেমন হেলমেট চুরি হবার ভয় থাকে অন্যদিকে হেলমেট পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার সুযোগ থাকে।

একান্তই রেখে যেতে হলে হেলমেট লক ব্যাবহার করতে হবে।

৩।ভাইজরের যত্নঃ

ভাইজর গ্লাস হেলমেটের খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং সেনসেটিভ একটা অংশ। ভাইজরের ভিতর দিয়েই আমরা সামনে দেখি তাই ভাইজর নোংরা থাকলে বা ভাইজরে দাগ পড়লে ভিজিবিলিটি কমে যাবে এবং এটা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারন হতে পারে।

ভাইজর পরিস্কার করতে অধিক সতর্ক না হলে পরিস্কার করতে গিয়েই নস্ট হতে পারে ভাইজর।

ধুলো যুক্ত ভাইজর কখনোই মুছতে যাবেন না এতে গ্লাসে মাইক্রোস্ক্র‍্যাচ পড়বে এবং রাতে বিপরীতের যানবাহনের আলোতে প্রচুর রিফ্লেশনের স্বীকার হবেন।

ভাইজর ক্লিন করতে হলে আগে এয়ার প্রেশার অথবা পানি দিয়ে ভাইজরের ধুলো সরাবেন, তারপর পরিস্কার এবং শুকনো মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে মুছবেন।

৪। ভেন্ট পরিচ্ছন রাখাঃ

হেলমেটের এয়ারভেন্ট গুলো দিয়ে হেলমেটের ভিতরে এয়ার ফ্লো হয় এবং বাতাসের সাথে সাথে ধুলোবালিও ঢুকে জমতে থাকে, তাই কিছুদিন পরপর এয়ার প্রেশার দিয়ে ভেন্টগুলো পরিস্কার করতে হবে৷

৫। স্টোরেজ টিপসঃ

হেলমেট রাখতে হবে আলো বাতাস পুর্ন শুকনো স্থানে এবং মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে, এতে ব্যাড স্মেল ও স্যাতস্যাতে ভাব দুর হবে। খোলা না রেখে হেলমেটের ব্যাগের ভিতর হেলমেট রাখা সবচেয়ে উত্তম।

শেষ কথা, হেলমেটের নিচে পাতলা টুপি বা বাফ ব্যাবহার করায় অভ্যস্ত হলে হেলমেট মাথার ঘামে ভিজবে না এতে প্যাডিং শুকনো ও ভালো থাকবে।

মনে রাখবেন, হেলমেটকে আপনি যত বেশি সুরক্ষিত রাখতে পারবেন হেলমেটে ও আপনাকে তত বেশি নিরাপদ রাখবে।

হেলমেট সম্পর্কে আরো কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে লিখে জানান।