অ্যাডভেঞ্চার, স্ক্র্যাম্বলার, স্পোর্টি মডেলের টু-হুইলারের প্রতি যেমন বাইক প্রেমীদের দুর্বলতা রয়েছে, তেমন এখনো বহু মধ্যবিত্তের নিত্যদিনের পথ চলার ভালোবাসা কিন্তু এখনও সেই কমিউটার সেগমেন্টেই আটকে রয়েছে। যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ আমাদের ইনবক্স আর বাজারে এর সেলস ভলিউম।
আর তাই আপনাদের চিন্তার ভাঁজ আরো একটু কমিয়ে দিতে এই সময়ে সেরা ৫ টি ১২৫ সি সি বাইক, দাম , ফিচার ও আমাদের মতামত তুলে ধরেছি এই লেখায়
Honda CB Shine SP
Honda CB Shine SP একটি ভদ্র ধাচের City Commuter বাইক যা CB Shine এর আপডেট সংস্করণ। CB Shine SP এ সেগমেন্টের একটি হালকা স্পোর্টস বাইকের মত, যেটির জ্বালানি ট্যাংক নান্দনিক ডিজাইন করা। Honda এ বাইকটিতে সিবিএস (সিনক্রোনাইজড ব্রেকিং সিস্টেম) ব্রেক ব্যাবহার করেছে। এই বাইকের মূল আকর্ষণ হ'ল এটির স্টাইল, আরামদায়ক এবং দামের মিশ্রনে একটি সম্পূর্ণ প্যাকেজ।
- Honda CB Shine SP 125cc বাইক হিসাবে এটি দেখতে পেশিবহুল, নির্মাণ মানও যথেস্ট ভালো।
- বাংলাদেশের বজারে 125cc যে বাইকগুলো রয়েছে, তাদের মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণে এই বাইকটি অন্যতম সেরা একটি বাইক।
- হোন্ডা সিবি শাইন এসপি আছে দুর্দান্ত রঙ এবং গ্রাফিক সংমিশ্রণ সহ সুন্দর বডি ওয়ার্ক । সিবি শাইন এসপি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন শুরু করেছে, ফলস্বরূপ এই বাজারে এর দাম বেশ কয়েকবার হ্রাস পেয়েছে।
- বাইকটিতে 125 সিসি শক্তিশালী ইঞ্জিন এবং সিঙ্ক্রোনাইজড ব্রেকিং সিস্টেম (সিবিএস) সুবিধা রয়েছে।
- ২০২১ সালের শুরুতেই বাইকটিতে কিছু নতুন রং এবং গ্রাফিক্সের সমন্বয় এসেছে, তবে বাইকটিতে উল্লেখযোগ্য বড় কোন পরিবর্তন আসিনি।
- CB Shine SP বাইকটির আকার আকৃতি এবং ওজন বিবেচনায় এটির পেছনের চাকা আরো কিছুটা মোটা হলে এর রাইডারদের জন্য আরো আরামদায়ক হতো।
বাইকটিতে 124.7 সিসি এয়ার কুলড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার 4-স্ট্রোক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটির ইঞ্জিন সর্বাধিক পাওয়ার 10.16 বিএইচপি @ 7500 আরপিএম এবং সর্বাধিক টর্ক 10.3 এনএম @ 5500 আরপিএম উৎপাদন করতে পারে। বাইকটিতে 5 স্পিড গিয়ার রয়েছে এবং এর সর্বাধিক গতি 110 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। এর মাইলেজ 65 কিলোমিটার প্রতি লিটারে l
Honda CB Shine SP (SD) Tk.143,500.00
Yamaha Saluto 125
125cc বিভাগে Yamaha Saluto 125 বাংলাদেশের বাজারে একটি বিশ্বস্ত বাইক। বিগত কয়েক বছর ধরে Saluto 125 বাইকটির বেশ সুনামের সাথেই বাংলাদেশে পদচারনা। বাংলাদেশে যদিও 125cc বাইকের চাহিদা তুলনামূলক কম, তারপরও Saluto 125 তার স্বমহিমায় উজ্জল। চলুন দেখি Yamaha Saluto 125 বাইকটির সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন।
- Yamaha তাদের Saluto 125 বাইকটিতে Blue Core প্রযুক্তির ইঞ্জিন ব্যবহার করেছে, যেটি তুলনামূলক জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং টেকসই।
- বাইকটির Rear Swing Arm Suspension বেশ ভালো কর্যকরী, যা অনেকটা খারাপ রাস্তায়ও তুলনামূলক ভালো কার্যকর।
- Saluto 125 বাইকটিতে Electric Start এবং Disc Brake এর মত আধুনিক সুবিধা থাকছে।
- এই বাইকটি দেওয়া হয়েছে Tubeless Tyre, যা বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়।
- চমৎকার ডিজাইনের Front Cowl সহ এই Standard Type বাইকটি কয়েকটি রং এবং গ্রাফিক্সের সমন্বয়ে স্থানীয় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
- একটি 125cc Standard বাইক হিসাবে Yamaha Saluto 125 বাইকটির বাংলাদেশের বাজারে মূল্য তুলনামূলক বেশি।
Yamaha তাদের এই বাইকটিতে 125cc ইঞ্জিন ব্যাবহার করেছে, যেটি সর্বোচ্চ শক্তি 6.1kW(8.3PS)/7000r/min এবং সর্বোচ্চ টর্ক 10.1N・m(1.0kgf・m)/4500r/min উৎপন্ন করতে সক্ষম। এই Yamaha Saluto 125 বাইকটি সর্বোচ্চ 95 kmph গতিতে চলতে সক্ষম। Yamaha বলছে তাদের Yamaha Saluto 125 বাইকটির গড় মাইলেজ প্রায় 70 কিলোমিটার। Yamaha Saluto 125 বাইকটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত নিম্নে দেওয়া হলো।
Yamaha Saluto 125 Tk.140,000.00
Bajaj Discover 125 Disc
Bajaj Discover 125 স্থানীয় বাইকারদের কাছে একটি পরিচিত নাম। প্রায় ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বাজারে Bajaj Discover 125 বাইকটির পদচারণা। একটা লম্বা সময ধরে Bajaj এর এই মোটরসাইকেল মডেলটি বাংলাদেশের সাধারন বাইকারদের আস্থা ধরে রাখতে পেরেছে। Bajaj ভারতীয় বাজারে তাদের এই সফল বাইক মডেলটির বিক্রি বন্ধ করে দিলেও বাংলাদেশের বাজারে তা পুরোদমে চালু রেখেছে। Bajaj সময়মত নিয়ম করেই বাংলাদেশের বাজারে তাদের এই বাইকটি হালনাগাদ করে আসছে।
- বর্তমান Bajaj Discover 125 বাইকটিতে Digital এবং Analog Instrument Cluster এর সংমিশ্রনে দারুন একটি ড্যাশবোর্ড দেওয়া হয়েছে।
- Bajaj Discover 125 বাইকটি Tubeless Tyre এবং CBS (combined braking system) ব্রেকিং সিস্টেম সহ, যা ব্রেকিং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- Bajaj Discover 125 বাইকটিতে বেশ কয়েকটি আকর্ষনীয় নতুন গ্রাফিক্স ডিজাইন সহ বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
- নতুন Bajaj Discover 125 বাইকটির সিটের ডিজাইনেও আনা হয়েছে পরিবর্তন, যা আগের তুলনায় বেশি আরামদায়ক রাইডিং এর অভিজ্ঞতা দেবে।
- বিভিন্ন ব্রান্ড তাদের 125cc বাইকের ডিজাইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনলেও Bajaj এখনো তাদের এই বাইকটিতে শুধু কসমেটিকস পরিবর্তন ছাড়া বড় কোন পরিবর্তন আনেনি।
বাইকটিতে ১২৪.৬ সি সি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা Single cylinder, 2-valve, DTS-i এর সাথে ExhausTEC। এর সর্বোচ্চ শক্তি 11 PS @ 7500 rpm এবং সর্বোচ্চ ঘূর্ণন বল 11 Nm @ 5000 rpm। Bajaj এর দাবি এটি প্রতি লিটার জ্বালানীতে সর্বোচ্চ ৬২ কিলোমিটার যেতে সক্ষম, এবং এটির সর্বোচ্চ গতি ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। বাইকটিতে ৫ গতির গিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে। Honda CB Shine এবং Hero Glamour এর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী।
Bajaj Discover 125 Disk Tk.147,500.00
Bajaj Discover 125 Drum Tk.120,500.00
Hero Ignitor 125
125 cc অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় Hero বাংলাদেশে খুব একটা ব্যবসাসফল নয়। এ অংশে প্রধান্য বিস্তার করার লক্ষেই Hero Ignitor 125 বাইকটি সম্প্রতি Hero Bangladesh Ltd বাংলাদেশে লন্স করে। বাইকটি দেখতে অনেকটাই HERO Glamour এর মত হলেও দুটি বাইকে রয়েছে ব্যাপক প্রার্থক্য। চলুন দেখি Ignitor 125 বাইকটির প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট এবং সংক্ষিপ্ত মূ্ল্যায়ন।
- Hero Ignitor 125 বাইকটিতে কিছুটা পেশিবহুল এবং চমৎকার ডিজাইনের fuel tank দেওয়া হয়েছে, যেটিতে রয়েছে dual tone গ্রাফিক্সের সাথে মুগ্ধকর Chrome Branding।
- এ বাইকটিতে Hero উদ্ভাবিত i3s প্রযুক্তির ব্যবহার হয়েছে, যা অধিক মাইলেজে সহায়ক।
- Ignitor 125 বাইকটিতে tubeless tyre ব্যবহৃত হয়েছে এবং বাইকটির পিছনের চাকার সাথে Fender দেওয়া হয়েছে।
- কিছুটা sporty লুকের এই বাইকটিতে আরামদায়ক sporty seat এবং চমৎকার ডিজাইনের Grab Rail দেওয়া হয়েছে।
- Hero Ignitor 125 বাইকটি Hero Glamour 125 এর তুলনায় আরো বেশি stylish। Ignitor 125 বাইকটির Headlamp, tail light এবং জ্বালানী ট্যাঙ্ক Glamour 125 এর তুলনায় অনেকটাই আলাদা।
- Hero Ignitor 125 বাইকটিতে ব্যবহৃত ইঞ্জিন Hero Glamour 125 বাইকে ব্যবহৃত ইঞ্জিনের তুলনায় বেশি শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম।
- Ignitor 125 বাইকটির halogen headlamp ব্যবহৃত হয়েছে, যা LED হলে আরো ভালো হতো।
- এই বাইকটির instrument console খুবই সাধারণ মানের, যেখানে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
- বাইকটির ওজন এবং style বিবেচনায় এটির পিছনের চাকায় আরো কিছুটা মোটা টায়ার ব্যবহার করলে রাইডিংয়ের অভিজ্ঞতা আরো ভালো হতো।
বাইকটিতে 124.7 cc ইঞ্জিন ব্যাবহার করা হয়েছে, যেটি Air cooled, 4 – stroke single cylinder, OHC। এটি সর্বোচ্চ শক্তি 11.4 bhp @ 8000 rpm এবং সর্বোচ্চ টর্ক 11 Nm @ 5000 rpm উৎপাদন করতে সক্ষম। বাইকটি সর্বোচ্চ গতি 100 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়, এবং এর মাইলেজ গড়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার প্রতি লিটারে। এটির Curb Weight 127 কিলোগ্রাম।
Ignitor 125 Tecno (SD) Tk.133,240.00
TVS Stryker 125
TVS Stryker 125 এ মডেলটি বিশেষ করে বাংলাদেশী মার্কেটের উপযোগী করে তৈরি। TVS তাদের কিছু কিছু মডেলে ভারত এবং বাংলাদেশের মার্কেটের জন্য আলাদা ভাবে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে। TVS বাংলাদেশের এ বাইকটি নিয়ে ব্যাপক আশাবাদি। এরি ধারাবাহিকতায় এ বাইকটির ব্যাপক প্রচার প্রচারনাও চালাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত বংলাদেশের মার্কেটে এটির দারুন সাড়া মিলছে।
- TVS তাদের এই Stryker 125 বাইকটিকে কিছুটা পেশিবহুল এবং বেশ আকর্ষনীয় লুক দিয়েছে, যা একটি স্বল্প মূল্যের 125cc standard বাইক হিসাবে যথেষ্ট।
- TVS Stryker 125 বাইকটিতে চমৎকার instrument cluster এর সাথে digital speedometer এবং এনালগ RPM meter ব্যবহৃত হয়েছে।
- বর্তমানে বাইকটিতে tubeless tyre ব্যবহার করা হয়, এতেকরে দুরপাল্লার রাইডিংয়েও আত্মবিশ্বাস অটুট থাকে।
- Stryker 125 বাইকটির সামনের চাকায় 240 mm disc brake এবং পিছনের চাকায় 130 mm drum brake দেওয়া হয়েছে, যা মোটামুটি ভালো ব্রেকিংয়ের নিস্চয়তা দেয়।
- এ বাইকটিতে PDC cast pillion footrest এবং LED tail lamp এর মত সুবিধা রয়েছে।
- TVS Stryker 125 বাইকটির খুচরা যন্ত্রাংশের গুনগতমান এবং স্থিতিশীলতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আসে।
- একটি 125cc বাইক হিসাবে এটির পেছনের চাকার ব্রেকিং কর্মক্ষমতা তুলনামূলক খুব একটা ভালো নয়।
এ বাইকটিতে ১২৪.৫ সি সি ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, যা Single Cylinder , 4 Stroke, Air Cooled Spark Ignition Engine। এটির সর্বোচ্চ শক্তি 8.0 (11 bhp) @ 8000 rpm এবং সর্বোচ্চ ঘূর্ণন বল 10.8 Nm @ 5500 rpm। এতে ৪ গতির Constant Mesh গিয়ার ব্যবহার করা হয়েছে। এ বাইকটি সর্বোচ্চ প্রতি ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। এবং এটি প্রতি লিটার জ্বালানীতে গড়ে ৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে সক্ষম। এটির ওজন ১১৭ কিলোগ্রাম। বাইকটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত নিম্নের বিবরণীতে।
TVS Stryker 125 Price Tk.134,900