বাইক বন্ধ, প্রেক্ষাপট ও আমাদের ভাবনা

জুলাই 04, 2022

বাইক বন্ধ, প্রেক্ষাপট ও আমাদের ভাবনা
খ্যাপে যাত্রী টানা বাইক রাইডার গুলা ঢাকার জন্য বিশাল একটা হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে। অপরিকল্পিত, নিয়মবহির্ভূত সবকিছুই শুরুতে নরমাল লাগলেও একটা সময় পর সেটা গলার কাটা হয়ে যায়। তখন সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

খ্যাপে যাত্রী টানা বাইক রাইডার গুলা ঢাকার জন্য বিশাল একটা হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে।

অপরিকল্পিত, নিয়মবহির্ভূত সবকিছুই শুরুতে নরমাল লাগলেও একটা সময় পর সেটা গলার কাটা হয়ে যায়। তখন সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

অ্যাপ ছাড়া রাইড নেয়া/দেয়া

অ্যাপ ছাড়া রাইড নেয়া/দেয়া দুইটাই নিয়মের বাইরে। অ্যাপের রাইডে যদি গভমেন্ট একটা রাজস্ব পাইতো, খ্যাপের ক্ষেত্রে সেটা পাচ্ছে না। আর খ্যাপ এর রাইডাররা এখন অ্যাপে যেতেই চায় না,তাই তাদের কাছে যাত্রীরা জিম্মি। এরা একটা পয়েন্ট এ দল বেধে দাঁড়াবে, একটা ফিক্সড ভাড়ায় সবাই সিন্ডিকেট করে ফেলবে। যেতে হলে অইটায়ই যেতে হবে। এর কমে কেউ যাবে না।

উবার-পাঠাও ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে কেন ?

উবার-পাঠাও এর মতো রাইড শেয়ারিং সার্ভিসগুলো ওয়ার্ল্ডওয়াইড বিজনেস করতেসে।বাংলাদেশে আইসাই এরা ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। খ্যাপ সার্ভিস এমনে চললে নতুন জেনারেশন এর মাথা থেকে কোনো ইনোভেটিভ আইডিয়া আসলেও তারা আর সামনে আগাবে না। নতুন উদ্যোক্তা তো বেড়ে উঠবে না-ই, জব অপর্চুনেটিও সৃষ্টি হবে না।

সেইফটি

এবার আসি সেইফটির কথায়। খ্যাপ এ গেলে যেকোনো ইনসিডেন্ট আপনার কোনো ট্র‍্যাক থাকবে না, সার্ভিস খারাপ হলে,খারাপ ব্যাবহার করলে কমপ্লেইন এর সুযোগও নাই। রাইডারদের ইমপ্রুভমেন্ট এর কোনো চান্স নাই। আর যেকোনো সময়, বিশেষ করে রাতের দিকে ছিনতাই এর রিস্ক তো আছেই। নিউজে এগুলা নিয়মিত দেখা যাচ্ছে।

ওয়েল ট্রেইনড না

পরিসংখ্যান এ দেখা গেসে, এই রাইড শেয়ারিং সার্ভিস শুরু হওয়ার পর মিড রেঞ্জ এর বাইক বিক্রি অস্বাভাবিকভাবে বেডে গেসে। একটা বাইক আর ঘুষ দিয়া কোনোভাবে লাইসেন্স নিয়ে নিলেই যে কেউ হয়ে যাচ্ছে রাইডার। অস্বাভাবিক হারে রাইডার বেড়েই যাচ্ছে। ৫০% এরও বেশি রাইডার ওয়েল ট্রেইনড না। রাইডাদের স্কিল মনিটরিং এর কিছুই নাই। কোনো কাজ না থাকলেই সে হয়ে যাচ্ছে রাইডার। অদক্ষ রাইডার হওয়ার কারনে এক্সিডেন্টও বাড়তেসে।

চালায় বাইক , কিন্তু রিকশাওয়ালা

অতিরিক্ত সংখ্যক রাইডার হওয়ার কারনে তারা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলায় দল বেধে দাড়াইয়া থাকবে। আর রিকশাওয়ালাদের মতো মানুষকে বিরক্ত করবে। আপনি একটা পয়েন্ট এ ১০ মিনিট দাড়ালে, মিনিমাম ১০ জন আইসা আপনকে জিগ্যেস করবেই। ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়াবে। তখন সব রাইডার দল বাইধা ঐ যাত্রীর সাথে লাইগা যাবে।

কয়দিন পর না তারা আবার শ্রমিক ফেডারেশনের মতো

"খ্যাপ ড্রাইভার কল্যাণ সমিতি " বানাইয়া ফেলে আল্লাহ জানে। এরপর পরিবহন শ্রমিক দের মতো উগ্র হইয়া যাবে।

প্রফেশন

এসব রাইডারদের অনেকেই আগে বিভিন্ন প্রফেশন এ ছিলো, কেউ স্টুডেন্ট, কেউ জব না পেয়ে রাইড শেয়ার করে। কিন্তু খ্যাপ মারার জন্য এদের একটা বড় অংশ রিকশাওয়ালাদের মতো আচরণ করে। কিন্তু তারা তাদেরকে সেই আগের মতোই রাজা মনে করে। তখনই লাগে ঝগড়া। এদেরকে কিছু বললেই দল বেধে ঝগড়া করবে। খুব বাজে ব্যবহার অনেকের। অনেক ভদ্রলোক মানুষও আছে।

অনেকেই বলবে যে মানুষ রাইড শেয়ার করেই ফ্যামিলি চালাচ্ছে,আমার কেনো এত অভিযোগ। আমি রাইডারদের বিপক্ষে না। তারা খ্যাপে যদি ইনকাম করতে পারে,তাইলে

অ্যাপেও পারবে। নিয়মের বাইরে কোনো কিছুতেই আবেগ দিয়ে হবে না।

এই সেক্টর টা ক্রিয়েট হওয়াতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হইসে। অনেক ফ্যামিলি এই রাইড শেয়ারিং এর টাকায় চলে। এই সেক্টর টা নস্ট হয়ে গেসে অলরেডি। ডিজিটাল দেশ, মেবি এই সংক্রান্ত কিছু রুল হইসে। পুরা জিনিসটাকে একটা প্ল্যানড রুলস-রেগুলেশন এ আনা দরকার। সব কিছু মনিটর হলে সার্ভিস প্রোভাইডার গুলাও ঠিকঠাক থাকবে। রাইডার-যাত্রী সবারই ভালো হবে। আর এই খ্যাপ বন্ধে ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট কে নিয়মিত মনিটরিং এর আদেশ দেয়া উচিৎ। এম্নেই দিন দিন ঢাকার ট্রাফিক কন্ডিশন বাজেই হচ্ছে। এইসব ইস্যু গুলো মনিটর না করলে আরো বিশ্রী হবে।